শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২৫ পূর্বাহ্ন

আপডেট
নড়াইলে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর ফাঁসি

নড়াইলে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর ফাঁসি

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল:
নড়াইলে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী মোঃ হেদায়েত হোসেনকে ফাঁসির মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমান করা হয়েছে। সোমবার (১৪ নভেম্বর) সকালে নড়াইলের অতিরিক্ত জেলাও দায়রা জজ মোঃ কেরামত আলী এ দন্ডাদেশ প্রদান করেন।
আসামি পলাতক থাকায় তার অনুপস্থিতিতেই আদালত এ দণ্ড দেন। মামলার অন্য দুই আসামীকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, মোঃ হেদায়েত হোসেন নামে দণ্ডপ্রাপ্ত ঐ আসামি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার পদ্মবিলা গ্রামের মৃত গোলাম রব্বানী শেখের ছেলে। পেশায় কসাই হেদায়েত তার দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জু আরার প্ররোচনায় ২০১২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম স্ত্রী মমতাজ বেগমকে রাতে কৌশলে বাড়ির অদূরে গম ক্ষেতে ডেকে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
ঘটনার পরে হেদায়তের কাপড়ে রক্ত লেগে থাকতে দেখে সন্দেহ হলে তাদের ছেলে রবিউল বাদি হয়ে পরদিন ৪ ফেব্রুয়ারি বাবা হেদায়েতের বিরুদ্ধে মাকে হত্যার অভিযোগ এনে মামলা করে। লোহাগড়া থানায় দায়ের কৃত এ মামলায় বাদি রবিউল তার বাবা ছাড়াও সৎমা আঞ্জু আরা এবং হত্যায় সহযোগিতা করায় মুকুল সিকদারের স্ত্রী জাহানারা ও তাদের মেয়ে স্বাধীনাকে আসামী করে ।
এদিকে ঘটনার পর হেদায়েত গা ঢাকা দেয়। পরে পুলিশের জালে ধরা পড়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের নিকট স্ত্রী মমতাজকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তাকে আদালতে তোলা হলে সেখানেও হেদায়েত নিজের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। এ অবস্থায় পুলিশ তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে হেদায়েত ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জুআরা ও ছোট ভাই খলিলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়ার পাশাপাশি হত্যায় জড়িত থাকার প্রমান না পেয়ে অব্যাহতি দেয়া হয় এজাহার নামীয় জাহানারা ও স্বাধীনাকে।
এদিকে বিচারিক প্রক্রিয়া চলাকালে আসামী হেদায়েত আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে কিছুদিন পরে পালিয়ে যায়। ফলে তার অনুপস্থিতিতেই দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া চলাকালে মোট ১৪ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণসহ আনুসঙ্গিক প্রমাণাদী বিচার-বিশ্লেষন শেষে আসামি হেদায়েতের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমান হলে সোমবার রায় ধার্য্যের দিনে তাকে ফাঁসি ছাড়াও অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়। এ দিকে গৃহবধু মমতাজ হত্যাকান্ডে অপর দুই আসামির সম্পৃক্ততার প্রমাণ না পাওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |